ইউজিসি এর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
টিটি২৪ প্রতিবেদক: বিশ্বে চলমান পরিস্থিতিতে (কোভিড-১৯) নোবেল করোনা ভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব আজ হুমকির মুখে। বাংলাদেশ ও তার ব্যাতিক্রম নয়। সারাদেশে চলছে লকডাউন, জনমানুষের জীবন, শিক্ষা, যোগাযোগ, অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ। এমতাবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে, এমন ঘোষণা আসে।
এই পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে অনলাইনে ক্লাস, পরীক্ষা, ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেয়। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সরব হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের মাধ্যম "প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীবৃন্দ" নামের ফেইসবুক গ্রুপে, আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের নিম্নোক্ত দাবী তুলে ধরেন।
তাদের দাবি, মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে সেমিস্টার ফি আদায় করতে পারবে না , স্পষ্টভাবে এই ঘোষণা দিতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেমিস্টার ফি কিস্তিতে আদায় করতে হবে এবং যাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নেই তাদের সেমিস্টার ফি মওকুফ করতে হবে। অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার সীমাবদ্ধতা বিস্তর।তাই নিম্নে উল্লেখিত সীমাবদ্ধতা সমূহ ১০০% দূর না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনলাইন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করতে হবে।
সেই গ্রুপে উল্লেখিত তাদের সীমাবদ্ধতা সমূহ, দূর্বল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা, ক্লাস পরীক্ষায় যুক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত ডিভাইসের অভাব, অনলাইনে ল্যাব ক্লাসে গুনগত মানের অভাব, ইন্টারনেট এর খরচ বহন করার সীমাবদ্ধতা ও অনলাইনে ক্লাস করানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকদের পর্যাপ্ত দক্ষতার অভাব উল্লেখযোগ্য।
সেখানে তারা আরও উল্লেখ করে, পরীক্ষামূলক ভাবে এক সপ্তাহ অনলাইনে কার্যক্রম চালিয়ে ১০০ ভাগ কার্যকারিতা নিশ্চিত করে তারপর মূল কার্যক্রমে যেতে হবে। ১০০% কার্যকরী সমাধান দিয়ে যদি অনলাইনে কার্যক্রম চালানোর উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করে সেমিস্টার এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়,তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালিত সেমিস্টার গুলোর ফি-এর ৪০% ছাড় দিতে হবে এবং আউটগোয়িং শিক্ষার্থী ও যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত সেশনের শুধু ফাইনাল এক্সাম আটকে আছে তাদের কে ইভালুয়েশন (মিড+ অ্যাসাইনমেন্ট +সিটি) মার্কস এর উপর গ্রেডিং করে সেমিস্টার শেষ করতে হবে (যদি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চায়)। তবে নতুন সেমিস্টারে কার্যক্রম শুরু করতে গেলে বাকি দাবি মেনে শুরু করতে হবে। কিন্তু সেমিস্টার ফি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিতে হবে।
"প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীবৃন্দ" গ্রুপের এডমিন এনবিআইইউ এর শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, চলমান পপরিস্থিতিতে কোনো ভাবেই অনলাইনে ক্লাস, এক্সাম দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই, সারাদেশে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নেই, অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার খুব কষ্টে দিন পার করছে, এমতাবস্থায় টিউশন ফি দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়। ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর শিক্ষার্থী মুবতাসিম ফুয়াদ বলেন গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই অনলাইন ক্লাস, এক্সাম, টিউশন ফি দেওয়া অসম্ভব। নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এর শিক্ষার্থী জায়েদ বলেন আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মহামারীর এই পরিস্থিতিতে ইউজিসির এমন সিদ্ধান্ত খুবই দুঃখ জনক,এতে অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করেন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সংকটে বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান। ইউজিসি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ব্যাবসায়িক নীতিকে রুক্ষে দিতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।